করবী গাছের উপকারিতা ও গুণাগুণ অনেক। ভেষজ চিকিৎসায় করবী গাছের রয়েছে আলাদা কদর। করবী গাছ উচ্চতায় ১০-১৫ ফুট পর্যন্ত বেড়ে থাকে। গাছের মূলদেশ থেকে বহু শাখা-প্রশাখা বের হয়। পাতা চার থেকে ছয় ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা।পাতার মাঝখানের শিরা বেশ শক্ত। আসুন জেনে নেই করবী গাছের উপকারিতা ও গুণাগুণ সম্পর্কে-
করবী গাছের উপকারিতা ও গুণাগুণঃ
আঘাত লেগে ফুলে গেলেঃ
করবী কচি পাতা ৫০ গ্রাম ছোট ছোট টুকরা করে কেটে মাটি বা স্টিলের পাত্রে ১০০ মি.লি. পানি দিয়ে সিদ্ধ করতে হবে। পানি ফুটে কাইয়ের মতো হলে পাত্র আঁচ থেকে নামিয়ে ফুলে যাওয়া জায়গায় লাগাতে হবে। কয়েক দিন লাগালে ফুলা সেরে যাবে।
চোখ ওঠায়ঃ
করবী গাছের কচি পাতার টাটকা রস চোখে দিলে চোখ ওঠা রোগে আরাম হয়। সারা দিনের মধ্যে মাত্র দু’বার প্রয়োগ করা দরকার। একবার সকালের দিকে চোখ পরিষ্কার করে এবং দ্বিতীয় বার দিতে হবে সন্ধ্যার পর। প্রতিবার ওষুধ লাগাবার আগে পরিষ্কার ন্যাকড়া বা তুলা সামান্য গরম পানিতে ভিজিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পর পর তিন দিন রস প্রয়োগ করলে চোখ সেরে যাবে।
পিঠে কার্বাঞ্চল হলেঃ
করবী গাছের টাটকা শিকড় সামান্য পানি দিয়ে বেটে সেটা কার্বাঞ্চলের ওপর প্রলেপ দিলে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। তবে সারতে একটু সময়ও লাগতে পারে। ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে প্রতিদিন দিনে একবার করে প্রলেপ দিতে হয়।
চামরা বা ছাল ওঠা রোগেঃ
অনেক সময় দেখা গেছে হাত ও পায়ের চামরা, এমন কি সারা শরীরের ওপরের চামড়া মাছের আঁশের মতো উঠে যাচ্ছে। এটা একটা বিশেষ ধরনের চর্মরোগ। করবী গাছের মূলের ছালের তেল গোসল করার পর লাগালে এ রোগে অব্যর্থ উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত স্থানে একই ওষধ দিনে দুবার লাগালে উপকার হয়।
বিছা ও ভীমরুলে কামড়ালেঃ
করবী গাছের কচি পাতাকে সিদ্ধ করে তার পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান ধুয়ে দিলে, বিষ নষ্ট হয় এবং ফোলা-যন্ত্রণাও কমে যায়।
গর্ভপাতেঃ
করবী গাছের শুকনা মূলের গুড়া দেড় গ্রাম ঠাণ্ডা পানির সাথে খেলে গর্ভপাত হয়। তবে মনে রাখতে হবে মূল খুবই বিষাক্ত; মাত্রা বেশি হলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। এটা খুবই ঝুঁকির কাজ। মূল খেলে তার পনের মিনিট বাদে দু’চামচ গাওয়া ঘি আধা কাপ দুধের সাথে মিশিয়ে অবশ্যই খেতে হবে। কারণ গাওয়া ঘি করবীর বিষক্রিয়া নষ্ট করে।
খোস ও পাচড়ায়ঃ
করবীর শিকড়ের ছাল বেটে তার রস দিনে একবার গোসল করার পর প্রয়োগ করলে খুব তাড়াতাড়ি ফল পাওয়া যায়।
লিঙ্গমুণ্ডের ক্ষতেঃ
করবী গাছের মূল পরিষ্কার পানির সাথে ঘষে থেঁতো করে পুরুষাঙ্গে লেপন করলে ক্ষত আরাম হয়। যদি মূল পানিতে ঘষার অসুবিধা থাকে তাহলে শিকড় পানি দিয়ে বেটে মলমের মতো লাগান যায়। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, লিঙ্গমুণ্ডে ঘা হয় সিফিলিস রোগে আক্রান্ত হলে।
চুল পাকা ও পড়া বন্ধ করতেঃ
করবী গাছের মূলের ছাল দুধ দিয়ে বেটে গোসল করার তিন ঘণ্টা আগে মাথায় মাখলে চুল পাকা বন্ধ হয়। এটা বোঝার জন্যে পাকা চুল আগে। সব তুলে ফেলে তারপর ওষুধ প্রয়োগ করলে এর গুণাগুণ সহজেই বোঝা যাবে।
Post a Comment
Thank You For Your Comment.